মসজিদে আকসার ইতিহাস ১

 


আল-আকসা মসজিদ (আরবি: ٱلْـمَـسْـجِـد الْاَقْـصَى‎, প্রতিবর্ণী. Al-Masjid al-Aqṣā‎, আইপিএ: [ʔælˈmæsdʒɪd ælˈʔɑqsˤɑ], মসজিদুল আকসা বা বাইতুল মুকাদ্দাস নামেও পরিচিত) জেরুসালেমের পুরনো শহরে অবস্থিত ইসলামের তৃতীয় পবিত্রতম মসজিদ[৬][৭] এটির সাথে একই প্রাঙ্গণে কুব্বাত আস সাখরা, কুব্বাত আস সিলসিলাকুব্বাত আন নবী নামক স্থাপনাগুলো অবস্থিত। স্থাপনাগুলো সহ এই পুরো স্থানটিকে হারাম আল শরিফ বলা হয়।[৮][৯][১০][১১] এছাড়াও স্থানটি "টেম্পল মাউন্ট" বলে পরিচত এবং ইহুদি ধর্মে পবিত্র বলে বিবেচিত হয়। ইসলামের বর্ণনা অনুযায়ী মুহাম্মদ (সা) মিরাজের রাতে মসজিদুল হারাম থেকে আল-আকসা মসজিদে এসেছিলেন এবং এখান থেকে তিনি ঊর্ধ্বাকাশের দিকে যাত্রা করেন। [১২][১৩][১৪] ইতিহাসবিদ পণ্ডিত ইবনে তাহমিয়ার মতে, আসলে সুলায়মান এর তৈরি সম্পূর্ণ উপাসনার স্থানটির নামই হল মসজিদুল আল-আকসা।[১৫] সহীহ অাল বোখারীর অাবু যর গিফারী ব‌র্ণিত হাদীস থে‌কে জানা যায় এ‌টি সর্ব প্রথম অাদম(আলাইহিস সালাম) তৈরি করেছিলেন এবং এ‌টি ছিল পৃ‌থিবীর দ্বিতীয় মস‌জিদ। রাসূল সাঃ‌কে হা‌দি‌সে জি‌জ্ঞেস করা হ‌য়ে‌ছে এ‌টি বায়তুল্লাহ নির্মা‌ণের কত দিন পর নির্মাণ করা হ‌য়ে‌ছিল? তি‌নি ব‌লে‌ন,চ‌ল্লিশ বছর পর। [১৬] মুসলমানরা বিশ্বাস করে, নির্মাণের পর থেকে এটি ঈসা (আঃ) (খ্রিস্টধর্মে যিশু) সহ অনেক নবীর দ্বারা এক আল্লাহকে উপাসনার স্থান হিসেবে ব্যবহৃত হয়ে এসেছে।[১৭][১৮][১৯] এই স্থান মুসলিমদের প্রথম কিবলা (প্রার্থনার দিক)।[২০][২১][২২] হিজরতের পর কুরআনের আয়াত অবতীর্ণ হওয়ার কারণে কাবা নতুন কিবলা হয়। [২৩] বর্তমানে "আল-আকসা" মসজিদ বলতে বোঝাায় কিবলি মসজিদ, মারওয়ানি মসজিদ ও বুরাক মসজিদ (৩টির) এর সমন্বয় যা "হারাম আল শরীফ" এর চার দেয়াল এর মধ্যেই অবস্থিত।

খলিফা উমর বর্তমান মসজিদের স্থানে একটি মসজিদ নির্মাণ করেছিলেন। পরবর্তীতে উমাইয়া খলিফা আবদুল মালিকের যুগে মসজিদটি পুনর্নির্মিত ও সম্প্রসারিত হয়। এই সংস্কার ৭০৫ খ্রিষ্টাব্দে তার পুত্র খলিফা প্রথম আল ওয়ালিদের শাসনামলে শেষ হয়। ৭৪৬ খ্রিষ্টাব্দে ভূমিকম্পে মসজিদটি ধ্বংসপ্রাপ্ত হলে আব্বাসীয় খলিফা আল মনসুর এটি পুনর্নির্মাণ করেন। পরে তার উত্তরসুরি আল মাহদি এর পুনর্নির্মাণ করেন। ১০৩৩ খ্রিষ্টাব্দে আরেকটি ভূমিকম্পে মসজিদটি ক্ষতিগ্রস্ত হলে ফাতেমীয় খলিফা আলি আজ-জাহির পুনরায় মসজিদটি নির্মাণ করেন যা বর্তমান অবধি টিকে রয়েছে।

বিভিন্ন শাসকের সময় মসজিদটিতে অতিরিক্ত অংশ যোগ করা হয়। এর মধ্যে রয়েছে গম্বুজ, আঙ্গিনা, মিম্বর, মিহরাব, অভ্যন্তরীণ কাঠামো। ১০৯৯ খ্রিষ্টাব্দে ক্রুসেডাররা জেরুসালেম দখল করার পর তারা মসজিদটিকে একটি প্রাসাদ এবং একই প্রাঙ্গণে অবস্থিত কুব্বাত আস সাখরাকে গির্জা হিসেবে ব্যবহার করত। সুলতান সালাহউদ্দিন জেরুসালেম পুনরায় জয় করার পর মসজিদ হিসেবে এর ব্যবহার পুনরায় শুরু হয়। আইয়ুবী, মামলুক, উসমানীয়, সুপ্রিম মুসলিম কাউন্সিল ও জর্ডানের তত্ত্বাবধানে এর নানাবিধ সংস্কার করা হয়। বর্তমানে পুরনো শহর ইসরায়েলি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে তবে মসজিদটি জর্ডা‌নি/ফিলিস্তিনি নেতৃত্বাধীন ইসলামি ওয়াকফের তত্ত্বাবধানে রয়েছে।

সুত্র ; উইকিপিডিয়া 

কোন মন্তব্য নেই

Blogger দ্বারা পরিচালিত.